স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা, ১৫ জুন ২০২৫
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। দীর্ঘদিনের প্রচলিত ‘গণবিজ্ঞপ্তি’ পদ্ধতি থেকে সরে এসে বিসিএস পদ্ধতির আদলে একক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রোববার (১৫ জুন) এনটিআরসিএর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির পর আর কোনো গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে না। পরিবর্তে শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তিই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হিসেবে কার্যকর হবে। ফলে ৭ম গণবিজ্ঞপ্তি আর হচ্ছে না বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, নতুন নিয়োগবিধিতে শিক্ষক নিবন্ধন ও নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়া একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে করে নিবন্ধনে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ সবাইকে সরাসরি চাকরির সুপারিশ দেওয়া সম্ভব হবে। একইসঙ্গে সময়, বয়স ও নিয়োগসংক্রান্ত জটিলতাও কমবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
এনটিআরসিএর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুহম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী এ বিষয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, “এখনো বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্মতি দিয়েছে, বর্তমানে এটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। সেখান থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করা হবে।”
নতুন প্রস্তাবিত নিয়ম অনুযায়ী, ‘১৯তম নিবন্ধন বিজ্ঞপ্তি’ আর প্রকাশ পাবে না। বরং সরাসরি “শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি” নামে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পদ অনুযায়ী পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনটিআরসিএর একজন কর্মকর্তা বলেন, “বিসিএসের মতো নিয়োগ পদ্ধতিতে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ যতজন, ঠিক ততজনকেই নিয়োগ দেওয়া হবে। অতিরিক্ত সনদধারী বেকার তৈরি হবে না। বয়স গণনা করা হবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ থেকেই।”
তিনি আরও বলেন, “চাকরিপ্রার্থীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল এনটিআরসিএ শুধু সনদ দেয়, কিন্তু চাকরি দেয় না। এই অভিযোগ দূর করতে আমরা কাঠামোতে বড় পরিবর্তন আনছি। নতুন নিয়মে বয়সজনিত জটিলতা, আলাদা গণবিজ্ঞপ্তির অপেক্ষা—সবই দূর হবে।”
বর্তমানে এনটিআরসিএ ৫টি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এক লাখেরও বেশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করেছে। আসন্ন ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও প্রায় ৬০ হাজার পদে নিয়োগ সুপারিশ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া এনটিআরসিএ ইতোমধ্যে ১৮টি শিক্ষক নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।
বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ৩০ হাজার ৮২৬টি বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ১৭ হাজার ৬৩৪টি স্কুল, ২ হাজার ৮৬৮টি কলেজ, ৮ হাজার ২২৯টি মাদ্রাসা ও ২ হাজার ২২২টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের দায়িত্ব এনটিআরসিএর ওপর ন্যস্ত।